Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

শিম ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রযুক্তি

ড. মোঃ জুলফিকার হায়দার প্রধান
শিম বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি জাতীয় ফসল। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে। বসতবাড়ি থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ে বাণিজ্যিকভাবে দেশের সর্বত্র শিম চাষ করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে শিমের আওতায় জমির পরিমাণ ২০৮৭২ হেক্টর এবং মোট উৎপাদন  ১৪৪০৫০ মেট্রিক টন (কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ ২০১৯)। বিভিন্ন প্রকার পোকামাকড় এবং রোগ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিম উৎপাদনে প্রভাব বিস্তার করে এবং এদের আক্রমণে ফসলের উল্লেখযোগ্য অংশ নষ্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বিভিন্ন পোকামাকড় ও রোগ হতে ফসল রক্ষার জন্য এদের আক্রমণের ধরন এবং ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা অত্যন্ত জরুরি। নিম্নে শিম ফসলে প্রধান প্রধান পোকা মাকড় ও রোগের আক্রমণ এবং ব্যবস্থাপনা স¤পর্কে আলোচনা করা হলো।

 

পোকামাকড়
ফল ছিদ্রকারী পোকা (
Pod borer) : পোকার লার্ভা ফুল, ফুলের কুঁড়ি এবং ফল ছিদ্র করে ভেতরের অংশ খায়। এদের আক্রমণে প্রচুর পরিমাণে ফল নষ্ট হয় এবং বাজারে বিক্রির অনুপযোগী হয়ে যায়। একটি লার্ভা একাধিক ফুল নষ্ট করতে পারে। আক্রান্ত ফলে পোকার খাওয়ার চিহ্ন ও মল দেখা যায়। অত্যধিক আক্রমণে ফল ঝরে পড়ে এবং ফলন কমে যায়।
 

ব্যবস্থাপনা
পোকার লার্ভা প্রথমে ফুলের ভেতরে অবস্থান করে। আক্রান্ত ফুল ও ফল পোকার লার্ভাসহ সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে। জমিতে উপকারী পোকা ব্রাকন হেবিটর অবমুক্ত করতে হবে। এক হেক্টর জমির জন্য প্রতি সপ্তাহে ১ ব্যাংকার ব্রাকন (৮০০- ১০০০টি পোকা) অবমুক্ত করতে হবে। জৈব বালাইনাশক (এমএনপিভি @ ০.২ গ্রাম/লিটার) প্রয়োগ করতে হবে। অত্যধিক আক্রান্ত এলাকায় আক্রমণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে স্পাইনোসেড (ট্রেসার ৪৫ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৪০ মিলি অথবা সাকসেস ১.২ মিলি) স্প্রে করতে হবে।


জাবপোকা (Aphid) : পূর্ণ বয়স্ক পোকা ও নিম্ফ উভয়েই গাছের নতুন ডগা, কচি পাতা, ফুলের কুঁড়ি, ফুল ও ফল থেকে রস চুষে খায়। কচি গাছে পোকার সংখ্যা বেশি হলে গাছ মারা যেতে পারে। বয়স্ক গাছে এদের আক্রমণে পাতা কুচড়ে যায়, হলদে রঙ ধারণ করে, গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। গাছে ফুল ও ফল অবস্থায় আক্রমণ হলে ফুলের কুঁড়ি ও কচি ফল ঝরে পড়ে, কচি ডগা মরে যায়। এরা গাছে মোজাইক ভাইরাস রোগ ছড়ায়।
 

ব্যবস্থাপনা
পোকাগুলো প্রাথমিক অবস্থায় ডগা এবং পাতায় দলবদ্ধভাবে অবস্থান করে। এই অবস্থায় এদেরকে হাত দিয়ে পিষে মেরে ফেলতে হবে। নিম বীজের দ্রবণ (১ কেজি অর্ধভাঙা নিমবীজ ২০ লিটার পানিতে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে) স্প্রে করতে হবে। অত্যধিক আক্রমণে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি অথবা ল্যাম্বডা সাইহেলোথ্রিন (সাইক্লোন ২.৫ ইসি বা ক্যারাটে ২.৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।


পাতা সুরঙ্গকারী পোকা (Leaf miner) : সদ্য জাত লার্ভা পাতা ছিদ্র করে ভেতরে ঢুকে এবং পাতার দুই এপিডার্মাল স্তরের মাঝে সবুজ অংশ আঁকাবাঁকা সুড়ঙ্গ করে খায়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে পাতার সমস্ত অংশে সুড়ঙ্গ দেখা যায় এবং দূর থেকে সমস্ত ক্ষেত পুড়ে যাওয়ার মতো মনে হয়। পাতার সবুজ অংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গাছে খাদ্য তৈরি ব্যাহত হয় এবং ফলন মারাত্মকভাবে কমে যায়। লার্ভার খাওয়া অংশটুকু স্বচ্ছ পর্দার মতো দেখায় এবং আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায়।
 

ব্যবস্থাপনা
বিভিন্ন অপোষক ফসলের সহিত শস্যপর্যায় অবলম্বন করতে হবে। ফসলের জমি এবং আশপাশ আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। পূর্ণ বয়স্ক পোকা ধরার জন্য আঠালো হলুদ ফাঁদ (
Yellow sticky trap) প্রয়োগ করতে হবে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে  
 

এসিফেট (এসাটাফ ৭৫ এসপি, টিডফেট ৭৫ এসপি, ফরচুনেট ৭৫ এসপি, হেসিফেট ৭৫ এসপি) প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। তবে কীটনাশক প্রয়োগের ১৫ দিনের মধ্যে শিম উত্তোলন করা যাবে না।
বিছাপোকা (
Hairy Caterpillar): পোকার লার্ভা গাছের পাতায় আক্রমণ করে ফসলের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। লার্ভাগুলো প্রাথমিক অবস্থায় দলবদ্ধভাবে পাতার নিচের অংশ থেকে খাওয়া শুরু করে এবং সমস্ত গাছ ঝাঝরা করে দেয়। অধিক আক্রমণে গাছ পাতাশূন্য হয়ে পড়ে, গাছের বৃদ্ধি ও ফলন কমে যায়।
 

ব্যবস্থাপনা
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ ও আগাছা দমন করতে হবে। আলোর ফাঁদ দিয়ে মথকে আকৃষ্ট করে ধরে মারা যায়। কীড়া প্রাথমিক অবস্থায় পাতায় বা গাছে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করে। এ সময় পোকাসহ পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে ল্যাম্বডা সাইহেলোথ্রিন (ক্যারাটে ২.৫ ইসি বা রিভা ২.৫ ইসি বা জুবাস ২.৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।

 

ক্ষুদ্র লালমাকড় (Red Mite) : এরা পাতা থেকে রস চুষে খায়। ফলে পাতার উপরের অংশে ফ্যাকাশে রং ধারণ করে এবং গাছের খাদ্য তৈরি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। অত্যধিক আক্রান্ত পাতা লালচে হয়ে যায়। গাছের বৃদ্ধি, ফুল ও ফল ধারণ বিঘ্ন হয় এবং ফলন কমে যায়।
 

ব্যবস্থাপনা
নিম বীজের দ্রবণ (১ কেজি অর্ধ ভাঙ্গা নিম বীজ ২০ লিটার পানিতে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে) স্প্রে করতে হবে। এবামেকটিন (ভার্টিমেক ১.৮ ইসি বা সানমেকটিন ১.৮ ইসি বা এমবুশ ১.৮ ইসি বা লাকাদ ১.৮ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১.২ মিলি হারে অত্যধিক আক্রমণে মাকড়নাশক স্প্রে করতে হবে।

 

রোগ
অ্যানথ্রাকনোজ বা ফল পচা (
Anthracnose) : পাতায় বৃত্তাকার বাদামি দাগ ও তার চারপাশে হলুদাভ বলয় দেখা যায়। ফলে প্রথমে ছোট গোলাকার গভীর কালো দাগ পড়ে এবং দাগ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। দাগের কিনারা বরাবর চারপাশে কালো রঙের বেস্টনি দেখা যায়। পরবর্তীতে ফলে রোগের আক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, আক্রান্ত ফলে গভীর কালো দাগ দেখা যায়। ফল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায় এবং বাজারমূল্য কমে যায়।
ব্যবস্থাপনা
রোগ মুক্ত গাছ থেকে ভালো বীজ সংগ্রহ করে লাগাতে হবে। বপনের পূর্বে বীজ প্রভেক্স (২.৫ গ্রাম/কেজি) দিয়ে শোধন করে লাগাতে হবে। অতিরিক্ত আক্রমণে ডায়থেন এম-৪৫ (২ গ্রাম/লিটার) অথবা টিল্ট (০.৫ মিলি/লিটার) স্প্রে করতে হবে।

 

মোজাইক (Mosaic)) : এ রোগের ফলে পাতায় হলুদ-সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইকের মতো দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত পাতা ছোট, বিবর্ণ, বিকৃত হয়। শিরা ও উপশিরা হলুদ হয়ে যায়। লতার পর্বমধ্য খাটো হয়ে আসে। ফলে গাছ খাটো হয়ে যায়। গাছে সাধারণত ফল ধরে না, ফুল কম আসে, কচি ফল খসখসে, ছোট ও দাগ যুক্ত হয়।
ব্যবস্থাপনা
ক্ষেত আগাছামুক্ত রাখতে হবে। আক্রান্ত গাছ দেখলেই প্রাথমিকভাবে তা তুলে নষ্ট করে ফেলতে হবে। ক্ষেতে বাহক পোকার উপস্থিতি দেখা দিলে জাব পোকার অনুমোদিত  কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ থেকে কোন বীজ সংগ্রহ করা যাবে না।
সাদা ছত্রাক (
Sclerotinia blight) : প্রাথমিক অবস্থায় কাÐে পানি ভেজা সাদা তুলার মতো ছত্রাকের উপস্থিতি দেখা যায়। পরবর্তীতে কাÐের উপরের দিকে অগ্রসর হয়ে পাতা, ফুল ও ফলে বিস্তার লাভ করে। আক্রান্ত অংশ সাদা ধূসর হতে বাদামি রঙের হয়ে মারা যায়।
 

ব্যবস্থাপনা
রোগ মুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। বপনের পূর্বে বীজ প্রভেক্স (২.৫ গ্রাম/কেজি) দিয়ে শোধন করে লাগাতে হবে। আক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় প্রতি লিটার পানিতে রোভরাল (২ গ্রাম/লিটার) অথবা ফলিকুর বা কন্টাফ (২ মিলি/লিটার) স্প্রে করতে হবে।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (কীটতত্ত¡), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সেউজগাড়ী, বগুড়া, মোবা : ০১৭১৬০৭১৭৬৪
ই-মেইল :Zulfikarhaider@yahoo.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon